Feeds:
Posts
Comments

Archive for the ‘bangla’ Category

একজন লোক, ধরা যাক তার নাম ক। আরেকজন লোক, তার নাম ধরি খ। ক আর খ দুইজনই মানবসভ্যতার এক ক্রান্তি লগ্নের মানুষ। পৃথিবীতে একমাত্র ক ই পারেন গল্প উপন্যাস অর্থাৎ সাহিত্য রচনা করতে। তাই সারা পৃথিবী জুড়ে মানুষের কাছে, ক এর চাহিদা আকাশজোড়া। ক যাই লেখুক না কেন, মানুষ গোগ্রাসে পাঠ করে আর অবাক বিস্ময়ে ভাবে, কি ভাবে পারে একটা মানুষ এরকম লিখতে !

ক এর সবই ভালো – শুধু সমস্যা একটাই, ক বড্ড ভুলোমনা। প্রায় সকালেই ক এর খেয়াল থাকে না, আগের রাতে সে কি লেখেছিলেন, কিংবা আদৌ কিছু লেখেছিলেন কি না। খাতা দেখার পর , আস্তে আস্তে মনে পড়তে থাকে। এটা বাদেও আরেকটা অস্বাস্থ্যকর বদভ্যাস ক এর আছে, ক পেনসিল ছাড়া লিখতে পারেন না। এটা যদিও বদভ্যাস না, তবে সমস্যা হচ্ছে ক একনাগাড়ে পেনসিলের পেছন দিকটা চাবাতে থাকেন, ফলে পেনসিলের পেছন দিক সব সময়ই লালাতে মাখামাখি হয়ে থাকে আর ক ও পেটের রোগে ভোগেন বিস্তর।

অনেকদিন পরের কথা। ক কিছুদিন যাবৎ একদমই লেখতে পারছেন না। সব বড় লেখকের যা হয় – ক সৃষ্টির প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছেন, কিন্তু পর্বত হয়ে নিদেন পক্ষে ইঁদুরও প্রসব করতে পারছেন না। নিজের বন্ধ্যাত্বে হতাশ হয়ে একদিন ক আত্মহত্যা করলেন। আমরা আগেই বলেছিলাম, ক ছিলেন এক মাত্র সাহিত্যিক – তাই তাঁর মৃত্যুতে পৃথিবী থেকে সাহিত্য বিলুপ্ত হল। পৃথিবী এক পুরানো অধ্যায়ে নতুনভাবে প্রবেশ করলো, সাহিত্যহীনতার যুগ।

গল্পের প্রায় শেষ দিকে এসে আমরা তাকাই খ এর দিকে। খ এর সারাজীবন ক এর মত বর্ণিল নয় কোন মতেই। সারা জীবন সে যত্ন নিয়ে কিছুই করেনি। তবে গত কিছুদিন ধরে সে নিষ্ঠা ভরে শুধু একটা কাজই করত – রোজ রাতে ক যা লিখতেন, তা রাবার দিয়ে মুছে দিত।

Read Full Post »

Dream Scene -01

স্বপ্নদৃশ্য – ০১

আমি স্বপ্ন দেখি কিছু পরিপার্শ্বের, কিছু জায়গার, কিছু দৃশ্যের। যেখানে হয়ত আমি কোন দিন যাবো না …… আবার যেতেও পারি।

কেমন হতে পারে সেই দৃশ্য গুলি ?

আজ শুরু করি এক শহরের কথা দিয়ে।

শহরের নাম প্যারিস ( বা উচ্চারণে প্যারী )। কোন এক সন্ধ্যা। একটু আগেই বৃষ্টি থেমে গিয়েছে।চারিদিকে ঠান্ডা বাতাস বয়ে যাচ্ছে। রাস্তা এখনো ভেজা। চারিদিকে হলুদ রঙের বাতি জ্বলছে।ভেজা রাস্তায় হলুদ আলোর প্রতিফলন। দূর থেকে ভেসে আসছে, কেনি জি র স্যাক্সোফোন।দূর নদীতে ছায়া পড়ছে আইফেল টাওয়ারের।হয়তো নদী তীরেই বসে আছি আমি।

– ১৬ই ডিসেম্বর,২০০৭ ( বিকাল ৫টা ৩০ মিনিট )

– ঢাকা,বাংলাদেশ।

Read Full Post »

NishiKabbyo -02

নিশিকাব্য-০২

কোন এক নক্ষত্রের রাতে জিজ্ঞেস করেছিলে আমায়
“তুমি কি জানো রাত্রি কি দিয়ে তৈরী হয় ? ”
চুপ থেকেছিলাম আমি
নাহ ! সত্যি আমি জানতাম না তখন
এতগুলো বছর কেটে গেলো
কি আশ্চর্য ! এখন আমি জানি !!
রাত্রি তৈরী হয়
তোমার আর আমার কথা দিয়ে,
আমাদের মাঝে বয়ে চলা নিরন্তর নৈঃশব্দ দিয়ে
তোমার হাসি দিয়ে
আমার অসহায়ত্ব দিয়ে
তোমার কপট রাগ দিয়ে
আর…আর…আর

আর

আমার সংগোপনে ফেলা দীর্ঘশ্বাস দিয়ে

নিছকই ফালতু একটি কবিতা, যা মাথায় আসে তাই লেখা। তিলকে তাল বানানোর সমস্ত প্রচেষ্টাকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

Read Full Post »

In Your Reply

স্বগতোক্তির প্রত্যুত্তরে

কোন একজনের স্বগতোক্তি পড়েছিলাম সেদিন

কিন্তু এ দিন ফুরিয়ে যাবে
উষ্ণ সময় জুড়িয়ে যাবে
আমিও হবো অন্যরকম
তুমিও সেদিন বুড়িয়ে যাবে

আমার মনে হল, আমার কিছু বলার ছিল এর প্রত্যুত্তরেসে কথাগুলোই বলে ফেললাম

—————————————————————————————–

হয়ত আমাদের যখন ঘুম ভাংগবে তখন মাঝরাতযে দিনের ফুরিয়ে যাওয়ার শঙ্কা আমাদের ছিলো, তা হয়ত আমরা দেখতেই পারি নিযে উষ্ণ সময়ের আলিঙ্গনে আমাদের মুগ্ধ হওয়ার কথা, তা আমরা অনুভবই করতে পারি নি । হয়ত ঘুম ভাঙ্গার পর উষ্ণ সূর্যের ছোঁয়ার বদলে, ঘুম ভাংগবে মাঝরাতের শীতল চাঁদের করস্পর্শে

নিজেদের বদলে যাওয়ার সেই রূপ হয়তো আমরা আর অনুভবই করবো না, কারন ঘুম ভেঙ্গে আমরা আয়নার সামনে দাঁড়াবো যখন আমরা পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছি

ভয় হয়, তখন অনুশোচনা হবে না তো ? হয়তো উষ্ণ সময়ের জুড়িয়ে যাওয়াটাও ভালোবাসার চাদরে মোড়ানো থাকতো

Read Full Post »

Neel er Vitor Neel,tar cheye Neel

নীলের ভেতর নীল, তার চেয়ে নীল

আকাশে আজ অনেক মেঘ করেছিল। সত্যিকারের ঘন কালো মেঘ। আমার মনটা বিষন্ন ছিল। তাই উদাস ভাবে বারান্দায় দাঁড়িয়ে দু হাত দিয়ে মেঘগুলো কে সরিয়ে দিলাম।সন্তর্পনে হেটে উঠলাম মেঘের উপর। মেঘের উপর আকাশটা কত নীল। কারা যেন বলেছিল, এই নীল আসলে শূন্যতা।সেই শূন্যতার দিকে নির্নিমেষ তাকিয়ে থাকলাম কিছুক্ষন।তারপর আবার হাটতে শুরু করলাম। কত সহস্র শতাব্দী আমি হাটলাম খেয়াল নেই।এক জায়গায় এসে দেখলাম, মেঘগুলি ভারি হয়ে নিচে নামছে, আর বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পড়ছে। নিচের সেই পৃথিবী অনেক সবুজ, আর তার মাঝে স্বচ্ছ জলের একটা সরোবর। সেই সরোবরে বৃষ্টি পড়ছে বিরামহীনভাবে। আমার ক্লান্ত লাগছিলো। তাই আমি নিচে নেমে এলাম। সরোবরে নেমে আজলা ভরে জলপান করলাম, আমার বহুদিনের তৃষিত হৃদয় মূহুর্তেই শীতল হয়ে গেল। আমি ক্লান্ত হয়ে নরম সবুজ ঘাসের উপর শুয়ে পড়লাম। একটা ব্যাং আমাকে এসে কত কি অনুযোগ করে গেল। একটা ঘাসফড়িং নিমন্ত্রন দিয়ে গেল, তার বাড়িতে যাওয়ার। প্রজাপতিটা এসে কত সুখ দুঃখের গল্প করে গেল।আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।ঘুম ভাংগলো যখন, তখন রাত হয়ে গিয়েছে। আকাশে থালার মত একটা চাঁদ উঠেছে। আকাশের সেই চাঁদের চেয়েও সুন্দর লাগছে, সরোবরে চাঁদের ছায়াকে। হঠাৎই সরোবর থেকে জোড়া ডলফিন দুটো লাফ দিয়ে উঠলো।কোন দূরে যেন বাঁশি বেজে উঠলো আর সহস্র উড়ন্ত বুনোহাঁসের আড়ালে ঢেকে গেল চাঁদ।

বিষন্ন মনে আমি হাটতে শুরু করলাম, আমার ভালোবাসার পৃথিবী থেকে। আবার ফিরে যেতে হবে সেই যান্ত্রিক পৃথিবীতে, যেখানে সব আছে, শুধু ভালোবাসাটাই নেই।

Read Full Post »

Je Din er Opekkhay

যে দিনের অপেক্ষায়


আমি ঘুমাচ্ছি না, অথচ কেমন যেন ঘুম ঘুম আবেশের মধ্যে আছি।মাথা কাজ করছে ধীরতম গতিতে। দৃষ্টি একদম ঘোলা হয়ে যাচ্ছে। চোখ বুজলেই মনে হচ্ছে অনেক দূরে কোথাও যেন চলে যাচ্ছি কিংবা অনেক উঁচু থেকে নিচে পড়ে যাচ্ছি। একটু মনঃসংযোগ করলেই দেখতে পাচ্ছি, অনেক রঙ দ্রুত গতিতে ছুটে এসে একটা বিন্দুতে এসে একে অপরের সাথে ধাক্কা খাচ্ছে। মূহুর্তেই সেই বিন্দুটা সাদা হয়ে যাচ্ছে, আর ধীরে ধীরে সেই সাদা বিন্দুটা প্রসারিত হয়ে একটা ক্যানভাসের মত ছড়িয়ে পড়ছে আমার চিন্তাতে। আমার চারপাশে কাদের অস্পষ্ট নিচু স্বরের কথা শুনতে পাচ্ছি। হঠাৎ সব রঙের বিন্দুগুলি কোথায় যেন মিলিয়ে গেল, সামনে সূর্যের মত উজ্জ্বল একটা কিছু জ্বলে উঠলো।চোখ ধাধিয়ে গেল এক মূহুর্তের জন্য। কিছু বুঝে উঠার আগেই হঠাৎ যেন ছুটতে শুরু করলাম আমি, একটা টানেলের মধ্য দিয়ে। চারপাশে কুয়াশাঘেরা অবাস্তব একটা দেয়াল। ঐ আলোর খুব কাছেই চলে এলাম। কিন্তু এ তো আলো না, নিরেট শুন্যতা। টানেলের একদম সামনেই আমি আর এক পা এগুলেই আমার সামনে দিগন্ত বিস্তৃত সেই শূন্যতা। একটু থামলাম আমি। পিছন দিকটা ফিরে তাকালাম শেষবার। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পা বাড়ালাম শূন্যতার পথে।

*************************************************


চিত্র কৃতজ্ঞতাঃ ফ্লিকার

Read Full Post »

Isshor-er kacche Arji

ঈশ্বরের কাছে আর্জি

দম্ভ বা অহংকার যাই বলি না কেন, আমার মধ্যে কিঞ্চিত মনে হয় সব সময়ই ছিলো।

 

খুব ছোটবেলাতে অনেক জোরে দৌড়াতে পারতাম বলে একটা গর্ব সবসময়ই ছিলো। আমার সেই গর্বকেই চূর্ণ করতে কিনা, একটু বড় হওয়ার পরই আবিষ্কার করলাম, আমার পা দুটিতে আর সেই জোড় নেই। আশে পাশের সেই বন্ধুরা আমার চেয়ে অনেক জোরে দৌড়ায়।কিভাবে কিভাবে যেন খেলাধূলা ব্যাপারটিতেই আমার এক ধরনের অদক্ষতা জন্ম নিল, ফলশ্রুতিতে খেলা দেখতে ভালো লাগলেও, নিজের খেলাধূলার প্রতি একটা বৈরাগ্য জন্ম নিলো।

 

মোটামুটি ভালো ছাত্রই ছিলাম স্কুল-কলেজ জীবনে। স্কুলে পড়ার সময়, হঠাৎই আবিষ্কার করলাম মোটামুটি অনেক শিক্ষকই আমার স্মরনশক্তির প্রশংসা করছে। আমিও ব্যাপারটা কিছুটা আঁচ করতে পারলাম। মোটামুটি একবার দেখলেই কোন তথ্য আমার মাথার মধ্যে গেড়ে যায়। এমনকি ক্লাস সেভেন এইটে পড়ার সময় পর্যন্ত আমি তিন গোয়েন্দার বিশাল পোকা ছিলাম। একদিন খেয়াল করলাম যে, আমি সেই সময় মোটামুটি আমার পড়া সব তিন গোয়েন্দার থেকে মোটামুটি একটা করে হলেও লাইন হুবহু বলতে পারি। অধিকাংশ বইএর থেকেই আমি একাধিক লাইন মনে করতে পারি। যখন আমি নিজের স্মরণশক্তি নিয়ে গর্বে দশহাত হয়ে আছি, তখন নিশ্চয়ই অলক্ষ্যে কেউ একজন মুচকি হাসছিলেন। সেই ছেলে আজ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। নিজের স্মরনশক্তি নিয়ে আজ আমি রীতিমত লজ্জিত। দিন তারিখ কিছুই খেয়াল রাখতে পারি না। এক জিনিশ বেশ কয়েকবার না পড়লে মনে থাকে না। এক লাইন মনে করাতো দূরের কথা, এক মাস আগে পড়া উপন্যাসের কাহিনীই মনে করতে পারি না। কি চমৎকার, তাই না ?

 

গর্ব করার মত সব হারিয়ে যখন প্রায় নিঃস্ব, তখনও মনের মধ্যে একটা ব্যাপার নিয়ে বোধহয় আমার গর্ব ছিলো। আমি সবসময় খুব খেয়াল করে কথা বলতাম যাতে আমার কথায় কেউ একটু হলেও আঘাত না পায়। মানুষের মনে আঘাত দেওয়া বিশেষত নিজের কোন কথার মাধ্যমে, আমার ঘোরতর অপছন্দের কাজের মধ্যে একটা। আমার এই চেষ্টার জন্য, নিজেকে নিয়ে আমার ভেতর কিছুটা গর্বতো ছিলোই। কিন্ত সবকিছু ভাঙ্গাতেই যিনি সমান পারংগম, তিনি আমার এই গর্ব ভাঙ্গার ব্যবস্থাও করলেন। নিজের প্রচন্ড বেখেয়ালী এবং আত্নরম্ভিতাপূর্ণ কথায় একজনকে কি ভয়াবহ আঘাত করলাম।নিজের এই ব্যবহারে আমি লজ্জিত এর চেয়েও বেশি হতবাক !

 

 

মনে হচ্ছে, অনেক হয়েছে। আর দরকার নেই একই নাটকের বারবার মঞ্চায়নের।

 

হে ঈশ্বর, আমাকে তুমি বিনয় দাও। আর কিছুই চাইনা।

Read Full Post »


—————————————————
ঘুম ভাংগলো আমার মিছিলের শব্দে। হাজার হাজার পা দ্রুত তালে মিছিল করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছে। মিছিলের প্রতি আমার আশৈশব আকর্ষণ। আমি দ্রুত উঠে ওদের সামনে যেয়ে বললাম, ভাই মিছিলে আমাকেও নেও। ঝাকরা চুলের,গোঁফওয়ালা একজন মিষ্টি হেসে বললেন, মিছিলে যাওয়ার সময় তোমার হয়নি। সময় হলে তুমিও আসবে। ম্লান মুখে আমি দূর থেকে শুধু সেই মিছিল দেখতে লাগলাম। শুধুই দর্শক, মিছিলে আর যেতে পারলাম না।


—————————————————–

চলে যাচ্ছেন সবাই। চেনা-অচেনা, বিখ্যাত-অখ্যাত সকলেই।দুবলার চরের সেই নাম না জানা জেলে থেকে শুরু করে সঞ্জীব চৌধুরী। দাড়াচ্ছেন না কেউই।নিয়মটা এমনই , কাউরো সাথে একটু কথা বলা যায়না, দেখা যায়না শেষবারের মত।

প্রতিদিন পত্রিকা খুললে, অজস্র মৃত্যুর খবর।কোন ঘটণা কতটা মর্মস্পর্শী তা মাপার যন্ত্র আমার নেই, মাপতেও চাই না।আমি শুধু নির্বাক চেয়ে থাকি। দাদার কোল থেকে নাতি যখন ঝড়ে উড়ে চলে যায়, কিংবা পরিবারের ৪ জন মারা যাবার পরও যখন আট মাসের শিশুর নিয়তির পরিহাস দেখার জন্য বেঁচে থাকে, তখন আমার চোখে জল আসে না, গলাও ভারী হয় না।আমি শুধু ভাবি এটাই জীবন। যত দুঃখ আমরা পাই, ততোই আঁকরে ধরি জীবনকে। হায় জীবন !


——————————————————

চলে গেলেন সঞ্জীব চৌধুরী, সবার প্রিয় সঞ্জীবদা। বয়সে আমার প্রায় দ্বিগুন এই ভদ্রলোকের সাথে পরিচয় হওয়ার সৌভাগ্য আর হোল না। অনেকেরই ব্যাক্তিগত জীবনে উনার সাথে পরিচয়ের সৌভাগ্য হয়েছে। অনেক স্মৃতি আছে। আমার তেমন কিছুই নেই। আমি উনার একজন একনিষ্ঠ শ্রোতা। আমার পরিচয় এতটুকুই।তবু কেন আমার চোখের কোনে জল চলে আসে যখন টিভিতে দেখি কি নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন তিনি। আহা , মৃত্যু মানুষকে কত নিশ্চয়তা দেয় ! ঘুমান সঞ্জীব, নিশ্চিন্তে, এই পৃথিবীর কোন কলুষতা আপনাকে আর স্পর্শ করবে না, আর দেখতে হবে না কোন আলো-আধাঁরি, করতে হবে না আর কোন অভিনয়। রংগমঞ্চে আপনার ভূমিকা ছিলো এত টুকুই। নেমে যাচ্ছেন আপনি দর্শকদের অকৃপন করতালির মধ্য দিয়ে, আর অতৃপ্তির হাহাকার ধ্বণি শুনতে শুনতে। আমরা এখনো স্টেজে আছি, দুরদুর বুকে অপেক্ষা করছি আমাদের রোলের শেষ প্রান্তের। অভিনয় শেষ হলে দেখা হবে ব্যাকস্টেজে, পরিচয়টা না হয় তখনই হবে।


—————————————————–

মিছিলে হারিয়ে গেলেন সঞ্জীব চৌধুরী। সাথে নিলেন না আমাদের। এই মিছিলে আমরা শুধুই দর্শক। কি ই আর আমরা করতে পারি দেখা ছাড়া, শুভকামনা জানানো ছাড়া !

ভালো থাকুন সঞ্জীব চৌধুরী, যেখানেই থাকুন।অন্তত আমাদের জন্য, আপনার চলে যাওয়াতে যাদের পোড়া চোখটা আরো পোড়াচ্ছে।

প্রথম প্রকাশঃ সচলায়তন – ২০শে নভেম্বর,২০০৭

Read Full Post »


======================================
সাহসী আমি ছিলাম না কোন কালেই। বরং সত্যি বললে বলতে হয়, আমি চিরকালই ভীতুর ডিম।খুব ছোট বেলা থেকেই আমার সাধ্য ছিলনা বড় আকারের কোন ২ নাম্বারি করার। আর যদিও বা করতাম, বাসায় এসে বলে দিতাম সেই অপকর্ম এর কথা।তা সেই আমি যখন বুয়েটে গন্ডগোল হল শেষবার, তখন নিরাপদে বুয়েট ক্যাম্পাস থেকে পিঠটান দিবো হল এর বন্ধুদের বিপদের মাঝে ফেলে, এ আর বিচিত্র কি !


=====================================
আমাকে কেউ যদি জিজ্ঞেস করে, তোমার প্লাস পয়েন্ট কি ? আমি বিনা ভাবনায় উত্তর দিবো যে, আমি আমার দুর্বলতা আর সবলতা, ২ টা সম্পর্কেই সম্যক জানি। আর জানি বলেই বলতে পারি যে, আমি আসলে মানুষ খারাপ না, একটু ভীতু, এই যা।


=====================================
লেখা লেখি করার অন্তর্গত ইচ্ছাটা আসলে আমার অনেক দিনের। ইচ্ছা বলছি এই কারনে, কারন আমি যত বেশী লেখার বিষয় নিয়ে ভেবেছি তার ১০% ও কাগজ কলমে বা কী বোর্ডে প্রকাশ করিনি।তা সেই আমি কিভাবে কিভাবে যেন দুষ্ট লোকের প্ররোচনায় পড়ে, ওয়ার্ডপ্রেসে একটা ব্লগ খুলে ফেল্লাম।ভাবলাম এই বেলা সাহস করে কিছু সত্যি কথা বলে গায়ের সেঁটে থাকা ভীতু ট্যাগটা সরাই। কিন্তু ভীতু-গিরি ব্যাপারটা আমার মধ্যে জিগার আঠার( এই জিগার আঠা ব্যাপারটা ঠিক কি আমি নিজেও জানি না ভালমত) মত গেড়ে গেছে। বিনপি-জামাতের সমালচনা করে তাও কিছু লেখতাম, কিন্তু ভদ্রলোকরা ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে আমি যেন ভীতু শিরোমনি হয়ে গেলাম। মনে কত কথা আসে কিন্তু লেখতে সাহসে কুলায় না।তার উপর মনে পড়ে সেই পার্থ নামের হতভাগ্য যুবকের কথা, দেশের অতি বিচক্ষণ আইটি শিরোমনি পুলিশ রাব ভাইরা যাকে ধরে “একটু আদর করে দিয়েছেন”। তাই চুপ করে ঘরের কোনে বসে রানিক্ষেত আক্রান্ত মুরগির মত ঝিমাই।কি দরকার মিছে ঝামেলার।

মাঝে মধ্যে মেজাজ খিচরে যায়, যখন কোথাকার কোন হরিদাস পালের কথা শুনে, ভদ্রলোকের সরকার পাটকল বন্ধ করে, সামান্য কার্টুনে অসামান্য ষড়যন্ত্র খুঁজে পায়।মাঝে মধ্যে মনে হয়, চিৎকার করে বলি, আমার কি রকম খারাপ লাগে যখন দেখি, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষক গ্রেফতারঃ জেল হাজতে প্রেরণ” শিরোনাম। তবে এর মাঝে যে অন্য কাজ করতেও ইচ্ছা করে না, তা নয়। যেমন মাঝে মধ্যেই মনে হয়, এক দলা থু থু ছিটিয়ে দেই দেশ এর সব আবাল বুদ্ধিজীবির গায়ের উপর, যারা এখনো নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে। জাফর ইকবার স্যার কিংবা শাহরিয়ার কবির এর মত সাহসী লোক কই যারা শিক্ষকের মুক্তি দাবি করে দ্বিধাহীণ কন্ঠে।


========================================
এই সব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে হঠাৎ টের পাই, উলটা পালটা ভাবছি আমি। এইসব ছাই পাশ ভেবে লাভ নাই। আমি মধ্যবিত্ত বাবা মার এক মাত্র ছেলে। বাবা মা অনেক শখ করে বুয়েটে ভর্তি করিয়েছে, পাশ করে ভাল চাকরি করার জন্য, এই সব রাবিশ চিন্তা করার জন্য না।

বিপ্লব করার জন্য অনেক লোক আছে, মধ্যবিত্তের জন্য বিপ্লব না। এইসব ভাবতে ভাবতে সার্কিট সল্ভ করার দিকে মনযোগ দেই,যা পেটে ভাত যোগাবে। বিপ্লবের চিন্তা অন্য কাউরো জন্য তোলা থাকলো।

Blog simultaneously published in http://www.sachalayatan.com/eeeboy/9354

Read Full Post »