Feeds:
Posts
Comments

Why do I feel like this ? I really don’t know. I feel it’s getting more difficult to withstand people and their attitudes, and yet to keep a smiling face or consciously suggesting yourself that, let’s be rational, let’s not think illogical. Reading newspaper and going through the facebook statuses and blogs  just develop an intense feeling of dislike and detest inside myself. Why do people think in such ways and I can’t tell them how much jerk they are right on their faces ? When I started this blog, I thought something else but right now I feel so scattered, dispersed- there is no point in continuing.

Happy pretending everyone.

একজন লোক, ধরা যাক তার নাম ক। আরেকজন লোক, তার নাম ধরি খ। ক আর খ দুইজনই মানবসভ্যতার এক ক্রান্তি লগ্নের মানুষ। পৃথিবীতে একমাত্র ক ই পারেন গল্প উপন্যাস অর্থাৎ সাহিত্য রচনা করতে। তাই সারা পৃথিবী জুড়ে মানুষের কাছে, ক এর চাহিদা আকাশজোড়া। ক যাই লেখুক না কেন, মানুষ গোগ্রাসে পাঠ করে আর অবাক বিস্ময়ে ভাবে, কি ভাবে পারে একটা মানুষ এরকম লিখতে !

ক এর সবই ভালো – শুধু সমস্যা একটাই, ক বড্ড ভুলোমনা। প্রায় সকালেই ক এর খেয়াল থাকে না, আগের রাতে সে কি লেখেছিলেন, কিংবা আদৌ কিছু লেখেছিলেন কি না। খাতা দেখার পর , আস্তে আস্তে মনে পড়তে থাকে। এটা বাদেও আরেকটা অস্বাস্থ্যকর বদভ্যাস ক এর আছে, ক পেনসিল ছাড়া লিখতে পারেন না। এটা যদিও বদভ্যাস না, তবে সমস্যা হচ্ছে ক একনাগাড়ে পেনসিলের পেছন দিকটা চাবাতে থাকেন, ফলে পেনসিলের পেছন দিক সব সময়ই লালাতে মাখামাখি হয়ে থাকে আর ক ও পেটের রোগে ভোগেন বিস্তর।

অনেকদিন পরের কথা। ক কিছুদিন যাবৎ একদমই লেখতে পারছেন না। সব বড় লেখকের যা হয় – ক সৃষ্টির প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছেন, কিন্তু পর্বত হয়ে নিদেন পক্ষে ইঁদুরও প্রসব করতে পারছেন না। নিজের বন্ধ্যাত্বে হতাশ হয়ে একদিন ক আত্মহত্যা করলেন। আমরা আগেই বলেছিলাম, ক ছিলেন এক মাত্র সাহিত্যিক – তাই তাঁর মৃত্যুতে পৃথিবী থেকে সাহিত্য বিলুপ্ত হল। পৃথিবী এক পুরানো অধ্যায়ে নতুনভাবে প্রবেশ করলো, সাহিত্যহীনতার যুগ।

গল্পের প্রায় শেষ দিকে এসে আমরা তাকাই খ এর দিকে। খ এর সারাজীবন ক এর মত বর্ণিল নয় কোন মতেই। সারা জীবন সে যত্ন নিয়ে কিছুই করেনি। তবে গত কিছুদিন ধরে সে নিষ্ঠা ভরে শুধু একটা কাজই করত – রোজ রাতে ক যা লিখতেন, তা রাবার দিয়ে মুছে দিত।

সাম্প্রতিক কালের সাড়াজাগানো চলচ্চিত্রের মধ্যে নিঃসন্দেহে “তারে জামিন পার” অন্যতম।অনেক দেরিতে হলেও অবশেষে দেখা হল।

তারে জামিন পার মূলত এক বিশেষ ধরণের শিখন প্রতিবন্ধীদের (Learning Disable ) উপজীব্য করে বানানো চলচ্চিত্র। ৮-৯ বছরের ঈষাণ শর্মা (দার্শিল সাফারি) পড়াশোনায় দুর্বল হওয়ার কারণে ঘরে, বাইরে সব জায়গায় পদে পদে লাঞ্ছিত। সকলেরই ধারণা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈষাণ পড়াশোনা করে না। ক্লাসে বসে সারাক্ষণ তাকিয়ে থাকে বাইরের দিকে। অবনতির চূড়ান্ত পর্যায়ে সাধারণ স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হল বোর্ডিং স্কুলে। সেখানেও অবস্থা তথৈবচ। হঠাৎ করেই একরাশ শীতল হাওয়ার মত স্কুলে আসলেন নতুন পার্টটাইম ড্রয়িং শিক্ষক নিকুম্ভ স্যার ( আমির খান ), যিনি নিজেও ঈষাণের মত এক দুঃসহ শৈশব কাটিয়েছেন, ডিসলেক্সিয়া রোগের রোগী হয়ে।তারই সাহচর্যে বেড়ে ওঠে ঈষাণ, সব প্রতিবন্ধকতাকে দূর করে।

ছবি হিসেবে গড়পড়তা বলিউডি ছবির চেয়ে অনেক এগিয়ে “তারে জামিন পার”। আমির খানের প্রথম পরিচালনা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার। অধিকাংশ শটেই যত্নের ছোঁয়া রয়েছে।কাহিনীর মধ্যে কিছুটা গতির ভারসাম্যহীনতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। যে গতিতে ঈষাণের দুর্দশা চিত্রায়িত হয়েছে, সে তুলনায় একটু বেশি দ্রুত সেই অচলাবস্থাত উত্তরণ দেখানো হয়েছে। আগের যুগের সেই বাংলা কিংবা হিন্দি ছবির মত এক গানেই কিংবা সেলাই মেশিন চালাতে চালাতে নায়ক নায়িকা বড় হয়ে যাওয়ার মত, এক গানেই রাতারাতি ঈষাণের উত্তরণ কিছুটা তাড়াহুড়া বলেই মনে হয়। সর্বোপরি, সিনেমার কাহিনীর বাধন এত শক্ত ছিলো যে, আরো ১৫-২০ মিনিট দৈর্ঘ বাড়ানো হলে তা সিনেমার বিশেষ সৌষ্ঠবহানি করতে বলে মনে হয় না।

সিনেমাতে সকলেই মোটামুটি ভালো অভিনয় করেছেন। তবে যার কথা বিশেষভাবে বলতে হয় তিনি ঈষাণ অর্থাৎ দার্শিল সাফারি। জীবনের প্রথম ছবিতেই তিনি বাজিমাত করেছেন। শিখন প্রতিবন্ধী শিশুর চরিত্রে তার অভিনয় বিশেষত মুখের যে অভিব্যক্তি তিনি দিয়েছেন তা অসাধারণ। আমির খান স্বভাবসুলভ ভাবেই ভালো অভিনয় করেছেন, তবে তার চরিত্রের একদম শুরুতে গানটার প্রয়োজনীয়তা ঠিক বোঝা যায়নি, ওরকম নর্তন কুর্দন বাদ দিলে, ছবিটা আরো বাস্তবসম্মত হত বলেই বোধ হয়।

তবে সামগ্রিকভাবে তারে জামিন পার, মনে দাগ কেটে যাওয়ার মত ছবি। আপনি একবার হলেও ভাবতে বাধ্য হবেন আপনার পাশের শিশুদের নিয়ে, তাদের মধ্য লুকানো প্রতিভা নিয়ে। শিখন প্রতিবন্ধকতা আমাদের সমাজের এক পরিচিত রোগ অথচ আমরা খুব কম লোকই সে ব্যাপারে জানি। তাই সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে এই চলচ্চিত্রের ভূমিকা নিঃসন্দেহে তুলনাহীন।

সর্বোপরি, সময় এবং পয়সা উসুল হওয়ার মত একটি ছবি। অদূর ভবিষ্যতে আমরা হয়ত এমনি আরো কিছু মাস্টারপীস আশা করতে পারি আমিরের থেকে।

Dream Scene -01

স্বপ্নদৃশ্য – ০১

আমি স্বপ্ন দেখি কিছু পরিপার্শ্বের, কিছু জায়গার, কিছু দৃশ্যের। যেখানে হয়ত আমি কোন দিন যাবো না …… আবার যেতেও পারি।

কেমন হতে পারে সেই দৃশ্য গুলি ?

আজ শুরু করি এক শহরের কথা দিয়ে।

শহরের নাম প্যারিস ( বা উচ্চারণে প্যারী )। কোন এক সন্ধ্যা। একটু আগেই বৃষ্টি থেমে গিয়েছে।চারিদিকে ঠান্ডা বাতাস বয়ে যাচ্ছে। রাস্তা এখনো ভেজা। চারিদিকে হলুদ রঙের বাতি জ্বলছে।ভেজা রাস্তায় হলুদ আলোর প্রতিফলন। দূর থেকে ভেসে আসছে, কেনি জি র স্যাক্সোফোন।দূর নদীতে ছায়া পড়ছে আইফেল টাওয়ারের।হয়তো নদী তীরেই বসে আছি আমি।

– ১৬ই ডিসেম্বর,২০০৭ ( বিকাল ৫টা ৩০ মিনিট )

– ঢাকা,বাংলাদেশ।

নিশিকাব্যঃ শেষ পর্ব

তারপর কেটে গেল কতগুলো বছর
রাত আর আমাদের জীবনে আসে না
আমরা বাঁচিনা সেই তারার আলোতে, সেই নক্ষত্রের রাতে
খোলা আকাশের নিচে বসে শুনিনা সেই বাঁশির শব্দ
তুমি আর জিজ্ঞেস করো না ,”রাত মানে কি ?”
হয়ত আমি বলতে চেয়েছিলাম
রাত মানে হেরে যাওয়া,
রাত মানে অব্যক্ত ব্যথা
রাত মানে অনেক বলেও রয়ে যাওয়া
না বলা কথা।
ভালোবাসার সমাধি এই পৃথিবীতে
রাত আর তাই কোনদিনই ফিরে না।

নিশিকাব্য এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। রাত্রি অনেক বড় ব্যপার। প্রত্যেকটা রাত আসে একটা নতুন রঙ নিয়ে।প্রতিটা রাতের থাকে আশ্চর্য সব কাহিনী।সে কাহিনী আমরা কেউ কাউকে বলতে পারি না। শুধু নিজেদের রাতে আমরা মিলে মিশে একাকার হয়ে যাই অন্ধকারের সাথে। প্রতিরাতেই তাই লেখা হয় নতুন নিশি কাব্য।

NishiKabbyo -02

নিশিকাব্য-০২

কোন এক নক্ষত্রের রাতে জিজ্ঞেস করেছিলে আমায়
“তুমি কি জানো রাত্রি কি দিয়ে তৈরী হয় ? ”
চুপ থেকেছিলাম আমি
নাহ ! সত্যি আমি জানতাম না তখন
এতগুলো বছর কেটে গেলো
কি আশ্চর্য ! এখন আমি জানি !!
রাত্রি তৈরী হয়
তোমার আর আমার কথা দিয়ে,
আমাদের মাঝে বয়ে চলা নিরন্তর নৈঃশব্দ দিয়ে
তোমার হাসি দিয়ে
আমার অসহায়ত্ব দিয়ে
তোমার কপট রাগ দিয়ে
আর…আর…আর

আর

আমার সংগোপনে ফেলা দীর্ঘশ্বাস দিয়ে

নিছকই ফালতু একটি কবিতা, যা মাথায় আসে তাই লেখা। তিলকে তাল বানানোর সমস্ত প্রচেষ্টাকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

In Your Reply

স্বগতোক্তির প্রত্যুত্তরে

কোন একজনের স্বগতোক্তি পড়েছিলাম সেদিন

কিন্তু এ দিন ফুরিয়ে যাবে
উষ্ণ সময় জুড়িয়ে যাবে
আমিও হবো অন্যরকম
তুমিও সেদিন বুড়িয়ে যাবে

আমার মনে হল, আমার কিছু বলার ছিল এর প্রত্যুত্তরেসে কথাগুলোই বলে ফেললাম

—————————————————————————————–

হয়ত আমাদের যখন ঘুম ভাংগবে তখন মাঝরাতযে দিনের ফুরিয়ে যাওয়ার শঙ্কা আমাদের ছিলো, তা হয়ত আমরা দেখতেই পারি নিযে উষ্ণ সময়ের আলিঙ্গনে আমাদের মুগ্ধ হওয়ার কথা, তা আমরা অনুভবই করতে পারি নি । হয়ত ঘুম ভাঙ্গার পর উষ্ণ সূর্যের ছোঁয়ার বদলে, ঘুম ভাংগবে মাঝরাতের শীতল চাঁদের করস্পর্শে

নিজেদের বদলে যাওয়ার সেই রূপ হয়তো আমরা আর অনুভবই করবো না, কারন ঘুম ভেঙ্গে আমরা আয়নার সামনে দাঁড়াবো যখন আমরা পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছি

ভয় হয়, তখন অনুশোচনা হবে না তো ? হয়তো উষ্ণ সময়ের জুড়িয়ে যাওয়াটাও ভালোবাসার চাদরে মোড়ানো থাকতো

নীলের ভেতর নীল, তার চেয়ে নীল

আকাশে আজ অনেক মেঘ করেছিল। সত্যিকারের ঘন কালো মেঘ। আমার মনটা বিষন্ন ছিল। তাই উদাস ভাবে বারান্দায় দাঁড়িয়ে দু হাত দিয়ে মেঘগুলো কে সরিয়ে দিলাম।সন্তর্পনে হেটে উঠলাম মেঘের উপর। মেঘের উপর আকাশটা কত নীল। কারা যেন বলেছিল, এই নীল আসলে শূন্যতা।সেই শূন্যতার দিকে নির্নিমেষ তাকিয়ে থাকলাম কিছুক্ষন।তারপর আবার হাটতে শুরু করলাম। কত সহস্র শতাব্দী আমি হাটলাম খেয়াল নেই।এক জায়গায় এসে দেখলাম, মেঘগুলি ভারি হয়ে নিচে নামছে, আর বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পড়ছে। নিচের সেই পৃথিবী অনেক সবুজ, আর তার মাঝে স্বচ্ছ জলের একটা সরোবর। সেই সরোবরে বৃষ্টি পড়ছে বিরামহীনভাবে। আমার ক্লান্ত লাগছিলো। তাই আমি নিচে নেমে এলাম। সরোবরে নেমে আজলা ভরে জলপান করলাম, আমার বহুদিনের তৃষিত হৃদয় মূহুর্তেই শীতল হয়ে গেল। আমি ক্লান্ত হয়ে নরম সবুজ ঘাসের উপর শুয়ে পড়লাম। একটা ব্যাং আমাকে এসে কত কি অনুযোগ করে গেল। একটা ঘাসফড়িং নিমন্ত্রন দিয়ে গেল, তার বাড়িতে যাওয়ার। প্রজাপতিটা এসে কত সুখ দুঃখের গল্প করে গেল।আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।ঘুম ভাংগলো যখন, তখন রাত হয়ে গিয়েছে। আকাশে থালার মত একটা চাঁদ উঠেছে। আকাশের সেই চাঁদের চেয়েও সুন্দর লাগছে, সরোবরে চাঁদের ছায়াকে। হঠাৎই সরোবর থেকে জোড়া ডলফিন দুটো লাফ দিয়ে উঠলো।কোন দূরে যেন বাঁশি বেজে উঠলো আর সহস্র উড়ন্ত বুনোহাঁসের আড়ালে ঢেকে গেল চাঁদ।

বিষন্ন মনে আমি হাটতে শুরু করলাম, আমার ভালোবাসার পৃথিবী থেকে। আবার ফিরে যেতে হবে সেই যান্ত্রিক পৃথিবীতে, যেখানে সব আছে, শুধু ভালোবাসাটাই নেই।

Je Din er Opekkhay

যে দিনের অপেক্ষায়


আমি ঘুমাচ্ছি না, অথচ কেমন যেন ঘুম ঘুম আবেশের মধ্যে আছি।মাথা কাজ করছে ধীরতম গতিতে। দৃষ্টি একদম ঘোলা হয়ে যাচ্ছে। চোখ বুজলেই মনে হচ্ছে অনেক দূরে কোথাও যেন চলে যাচ্ছি কিংবা অনেক উঁচু থেকে নিচে পড়ে যাচ্ছি। একটু মনঃসংযোগ করলেই দেখতে পাচ্ছি, অনেক রঙ দ্রুত গতিতে ছুটে এসে একটা বিন্দুতে এসে একে অপরের সাথে ধাক্কা খাচ্ছে। মূহুর্তেই সেই বিন্দুটা সাদা হয়ে যাচ্ছে, আর ধীরে ধীরে সেই সাদা বিন্দুটা প্রসারিত হয়ে একটা ক্যানভাসের মত ছড়িয়ে পড়ছে আমার চিন্তাতে। আমার চারপাশে কাদের অস্পষ্ট নিচু স্বরের কথা শুনতে পাচ্ছি। হঠাৎ সব রঙের বিন্দুগুলি কোথায় যেন মিলিয়ে গেল, সামনে সূর্যের মত উজ্জ্বল একটা কিছু জ্বলে উঠলো।চোখ ধাধিয়ে গেল এক মূহুর্তের জন্য। কিছু বুঝে উঠার আগেই হঠাৎ যেন ছুটতে শুরু করলাম আমি, একটা টানেলের মধ্য দিয়ে। চারপাশে কুয়াশাঘেরা অবাস্তব একটা দেয়াল। ঐ আলোর খুব কাছেই চলে এলাম। কিন্তু এ তো আলো না, নিরেট শুন্যতা। টানেলের একদম সামনেই আমি আর এক পা এগুলেই আমার সামনে দিগন্ত বিস্তৃত সেই শূন্যতা। একটু থামলাম আমি। পিছন দিকটা ফিরে তাকালাম শেষবার। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পা বাড়ালাম শূন্যতার পথে।

*************************************************


চিত্র কৃতজ্ঞতাঃ ফ্লিকার

Isshor-er kacche Arji

ঈশ্বরের কাছে আর্জি

দম্ভ বা অহংকার যাই বলি না কেন, আমার মধ্যে কিঞ্চিত মনে হয় সব সময়ই ছিলো।

 

খুব ছোটবেলাতে অনেক জোরে দৌড়াতে পারতাম বলে একটা গর্ব সবসময়ই ছিলো। আমার সেই গর্বকেই চূর্ণ করতে কিনা, একটু বড় হওয়ার পরই আবিষ্কার করলাম, আমার পা দুটিতে আর সেই জোড় নেই। আশে পাশের সেই বন্ধুরা আমার চেয়ে অনেক জোরে দৌড়ায়।কিভাবে কিভাবে যেন খেলাধূলা ব্যাপারটিতেই আমার এক ধরনের অদক্ষতা জন্ম নিল, ফলশ্রুতিতে খেলা দেখতে ভালো লাগলেও, নিজের খেলাধূলার প্রতি একটা বৈরাগ্য জন্ম নিলো।

 

মোটামুটি ভালো ছাত্রই ছিলাম স্কুল-কলেজ জীবনে। স্কুলে পড়ার সময়, হঠাৎই আবিষ্কার করলাম মোটামুটি অনেক শিক্ষকই আমার স্মরনশক্তির প্রশংসা করছে। আমিও ব্যাপারটা কিছুটা আঁচ করতে পারলাম। মোটামুটি একবার দেখলেই কোন তথ্য আমার মাথার মধ্যে গেড়ে যায়। এমনকি ক্লাস সেভেন এইটে পড়ার সময় পর্যন্ত আমি তিন গোয়েন্দার বিশাল পোকা ছিলাম। একদিন খেয়াল করলাম যে, আমি সেই সময় মোটামুটি আমার পড়া সব তিন গোয়েন্দার থেকে মোটামুটি একটা করে হলেও লাইন হুবহু বলতে পারি। অধিকাংশ বইএর থেকেই আমি একাধিক লাইন মনে করতে পারি। যখন আমি নিজের স্মরণশক্তি নিয়ে গর্বে দশহাত হয়ে আছি, তখন নিশ্চয়ই অলক্ষ্যে কেউ একজন মুচকি হাসছিলেন। সেই ছেলে আজ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। নিজের স্মরনশক্তি নিয়ে আজ আমি রীতিমত লজ্জিত। দিন তারিখ কিছুই খেয়াল রাখতে পারি না। এক জিনিশ বেশ কয়েকবার না পড়লে মনে থাকে না। এক লাইন মনে করাতো দূরের কথা, এক মাস আগে পড়া উপন্যাসের কাহিনীই মনে করতে পারি না। কি চমৎকার, তাই না ?

 

গর্ব করার মত সব হারিয়ে যখন প্রায় নিঃস্ব, তখনও মনের মধ্যে একটা ব্যাপার নিয়ে বোধহয় আমার গর্ব ছিলো। আমি সবসময় খুব খেয়াল করে কথা বলতাম যাতে আমার কথায় কেউ একটু হলেও আঘাত না পায়। মানুষের মনে আঘাত দেওয়া বিশেষত নিজের কোন কথার মাধ্যমে, আমার ঘোরতর অপছন্দের কাজের মধ্যে একটা। আমার এই চেষ্টার জন্য, নিজেকে নিয়ে আমার ভেতর কিছুটা গর্বতো ছিলোই। কিন্ত সবকিছু ভাঙ্গাতেই যিনি সমান পারংগম, তিনি আমার এই গর্ব ভাঙ্গার ব্যবস্থাও করলেন। নিজের প্রচন্ড বেখেয়ালী এবং আত্নরম্ভিতাপূর্ণ কথায় একজনকে কি ভয়াবহ আঘাত করলাম।নিজের এই ব্যবহারে আমি লজ্জিত এর চেয়েও বেশি হতবাক !

 

 

মনে হচ্ছে, অনেক হয়েছে। আর দরকার নেই একই নাটকের বারবার মঞ্চায়নের।

 

হে ঈশ্বর, আমাকে তুমি বিনয় দাও। আর কিছুই চাইনা।